জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবর্তী দিন আগামী সোমবার (৭ জুলাই) ধার্য করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন।
আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, “আগামী সোমবার আমরা আদালতে আবেদনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানাব। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়।”
সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ।
আদালত জানায়, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়েছে। এখন আসামিদের পক্ষে শুনানির জন্য ৭ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিনই অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জমা দেওয়া হবে।
এর আগে, গত ১ জুন একই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল এক আদেশে তাদের হাজির হওয়ার জন্য দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। ১৭ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়—৭ দিনের মধ্যে তারা আদালতে হাজির না হলে অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
আলোচিত এ মামলায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলির নির্দেশ, হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়—এই ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার নিরস্ত্র মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মামলার শুনানি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।